কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি।।‘সকলের অংশগ্রহণ, হ্রাস পাবে প্লাষ্টিক দূষণ’ স্লোগানে
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় বিচ হাফ ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ম্যারাথনের আয়োজন করে বাংলায় বিজ্ঞান চর্চা ও বিকাশে অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন কসমিক কালচার ট্রাষ্ট। শুক্রবার সূর্যোদয়ের পূর্বেই সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু হয় এ ম্যারাথন। আড়াই’শ অপেশাদার ও শৌখিন দৌড়বিদ ২১ কিলোমিটার হাফ ম্যারাথন এবং ১০ কিলোমিটার পাওয়ার রান ম্যারাথন ক্যাটাগরিতে অংশ নেন। দৌড়বিদরা সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে দৌড় শুরু করে লেম্বুরবন পর্যন্ত গিয়ে পুনরায় জিরো পয়েন্টে ফিরে আসেন।
বয়স ভিত্তিক ২১ কিলোমিটার হাফ ম্যারথনে যুবকদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন আমির উদ্দিন এবং নারীদের মধ্যে দিলারা। ১০ কিলোমিটার পাওয়ার রান দৌড়ে প্রথম হয়েছেন মোঃ মাহফুজ আহমেদ এবং নার্গীস জাহান ওহাব। প্রবীনদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন ইকবাল। এছাড়া ২১ কিলোমিটারে প্রথম রানার-আপ ছিলেন লুৎফর এবং ১০ কিলোমিটারে প্রথম হয়েছেন মুহতাসীন আল কাফি।
পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির কুয়াকাটা সৈকতকে ম্যারাথন দৌড়ের জন্য বেছে নেয়ায় খুশি অংশগ্রহণকারীরা।
১০ কিঃমিঃ রানের প্রথম স্থান অধিকারকারী মো. মুহতাসিন আল কাফি বলেন, আমি আমার জীবনে ধ্যান জ্ঞানে সব সময় রেসটাকে প্রাধান্য দেই। আমার এসএসসি পরীক্ষা চলমান তবুও আজ শুক্রবার পরীক্ষা বন্ধ থাকায় আমি এ ম্যরাথনে অংশগ্রহণ করেছি।
অপরদিকে প্রবীণ হাফ ম্যারাথনে পুরুষ এককে প্রথম স্থান অধিকারী লুৎফর রহমান বলেন, আমি আমার পুরো জীবনের ফোকাস দিয়ে আসছি ম্যারাথনের উপর। আজ এ ইভেন্টের মাধ্যমে পর্যটন বিকাশের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
কুয়াকাটায় অনুষ্ঠিত বরিশাল ম্যারাথনের রেস ডিরেক্টর থিওডোর যোয়েল কর্মকার বলেন, ‘ম্যারাথন মানুষের শারিরিক, মানসিক এবং সামাজিক সৃজনশীলতা বিকাশে এবং পারস্পরিক ঐক্য-সম্প্রীতি-সহযোগিতা প্রকাশের একটি কার্যকর মাধ্যম। তাই এই আয়োজনটি মানুষের অনেক বৈচিত্র্যতার মাঝেও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সুযোগ, যা আমাদের ঐতিহ্য-সংস্কৃতির সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র তৈরিতে অনুপ্রাণিত করবে।’
আয়োজক প্রতিষ্ঠান কসমিক কালচারের জনসংযোগ সমন্বয়ক জুলিয়েট রোজেটি বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি এই সামাজিক উদ্যোগ জন সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রাত্যহিক জীবনে প্লাস্টিকজাত পণ্য ব্যবহার হ্রাসকরণে সকলের অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়েই বৈশ্বিক দূষণ কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হবে।
সমুদ্র সৈকতে এই ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হওয়ায় ইভেন্টে অংশগ্রহণকারী সকল রানার, স্থানীয় জনসাধারণ ও পর্যটকদের মাঝে পরিবেশ দূষণ কমাতে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করি।’
কসমিক কালচার ট্রাস্টের সভাপতি ডক্টর অনিস মন্ডল বলেন, প্লাস্টিক দূষণ সম্পর্কে রানার, স্থানীয় জনগণ ও পর্যটকদের সচেতনতা বৃদ্ধিই হচ্ছে এই কর্মসূচীর মূল লক্ষ্য। মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কুয়াকাটা সৈকতে ম্যারাথন দৌড়ের আয়োজন করা হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত রানারের অংশগ্রহনের মধ্যে দিয়ে আয়োজনটি সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এমন আয়োজন দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটাকে আবারও বিশ্ব দরবারে পরিচিত করবে। এর ফলে কুয়াকাটার প্রতি দেশ-বিদেশের মানুষের আকর্ষণ বহুগুনে বাড়বে।